সর্বশেষ

Wednesday, 23 July 2025

মোথাবাড়ি বিধানসভায় 2026 শে লড়াই তে কে কোথায়, বিধানসভায় প্রার্থীর দৌড়ে কারা ?

মোথাবাড়ি বিধানসভায় 2026 শে লড়াই তে কে কোথায়, বিধানসভায় প্রার্থীর দৌড়ে কারা ?

শুভকল্যাণ বিশ্বাস, দৃষ্টি বাংলা, মোথাবাড়ি - ২০২৬ সালে বিধানসভা ভোটে মোথাবাড়িতে শাসক বিরোধী দলের তুলনা করলে দেখা যায়, শাসক দল কয়েক গুণ এগিয়ে থাকবে বিরোধী দলের থেকে। তার কারণ এখানে ৬৭. ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট। যার কারনে এখানে তৃণমূলের জয় সময়ের অপেক্ষা মাত্র। 
 বর্তমানে বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন ২০১১ সাল থেকে এখানে জয়লাভ করে আসছে। 
 ২০১১ এবং ২০১৬ সালে তিনি কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন। ২০২১ সালের আগে তৃণমূলে যোগদান করে তিনি তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছেন।
 ২০১৬ সালে এখানে সাবিনা ইয়াসমিন ৬৯০৮৯ভোট পেয়েছিলেন। যা পোলিং ভোটের ৫২%. আর সিপিএমের মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম পেয়েছিলেন ৩০৯১৫ ভোট. বিজেপির শ্যামচাঁদ ঘোষ পেয়েছিলেন ২৭৩০৯ ভোট.
 সাবিনা ইয়াসমিন এখানে পরপর তিনবার দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেছেন। আর বিজেপির শ্যামচাঁদ ঘোষ  এখানে পরপর তিনবার দাঁড়িয়ে হেরেছেন। 
 জাত পাতের ভিত্তিতে এখানে ভোট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়।
 ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় সাবিনা ইয়াসমিন এখানে ৬০ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন পোলিং ভোটের। তিনি মোট ৯৭৩৯৭ ভোট পেয়েছিলেন।
 বিজেপির শ্যামচাঁদ ঘোষ পেয়েছিলেন ৪০৮২৪ ভোট। তিনি মোট ২৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। দুলাল শেখ পেয়েছিলেন ১৬৯০৩ ভোট।
 বুধভিত্তিক ২০২১ বিধানসভার ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় তৃণমূল এই বিধানসভায় ৬৮ শতাংশ বুথে লিড নিয়েছিল। বিজেপি লিড নিয়েছিল ১৭ শতাংশ বুথে। বাকি অন্যান্য বুথ গুলিতে কংগ্রেস সিপিএম লিড নিয়েছিল। 
 বিজেপি যে সমস্ত জায়গা গুলিতে ভালো ফল করেছিল তার মধ্যে ৮১ নম্বর বুথ থেকে ৯৩ বুথ পর্যন্ত উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামে। 
৫নং বুথ থেকে ১৯নং পঞ্চনন্দপুর গ্রামের বুথ গুলিতে। বিজেপির সংগঠন একমাত্র উত্তর লক্ষীপুর এবং পঞ্চানন্দপুর গ্রামে ভালো আছে। 
 মোথাবাড়ি বিধানসভায় বিজেপি ৫০ শতাংশ বুথ কমিটি সঠিকভাবে নির্বাচন করতে পারেনি। 
 কিছু কিছু বুথে শুধু বুথ সভাপতি নামেই আছে। সেখানে কোন কমিটি নেই। আলিনগর ও সুলতানগঞ্জ গ্রামের বিজেপি সংগঠন নেই বললেই চলে। এই বিধানসভা ২৭৭ টি বুথের মধ্যে বিজেপির ১০০র কাছাকাছি বুথে কোন সংগঠন নেই। যে টুকু সংগঠন ছিল  সেটা নষ্ট হয়ে গেছে  পরপর তিনবার শ্যামচাঁদ ঘোষকে প্রার্থী করার কারণে। এখানকার কর্মীদের অভিযোগ, ভোটে দাঁড়ানোর পরে আর খোঁজ পাওয়া যায় না শ্যামচাঁদ ঘোষের। ভোট আসার সময় আগে থেকে তিনি সক্রিয় হয়ে ওঠেন টিকিট নেওয়ার জন্য। এই গুরুতর অভিযোগ করেছে বেশিরভাগ কর্মীরাই। 
 যদিও এখানে বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবুও ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে সঠিক প্রার্থী নির্বাচন করতে পারলে বিজেপি অনেকটা পরাজয়ের মার্জিন কমিয়ে আনতে পারতো। ২০২১ সালে বিজেপি এখানে ৪৬ হাজার ৫৭৩ ভোটে পরাজিত হয়েছিলো।
 যদি ২০২১ সালে শ্যামচাঁদ ঘোষকে প্রার্থী না করে অন্য কাউকে প্রার্থী করা হতো তাহলে হয়তো  মার্জিন আরো কমিয়ে আনা যেত। 
 এখন দেখে নেওয়া যাক আমাদের জনমত সমীক্ষায় যে তথ্য উঠে এসেছে সেটি হলো, যদি ২০২৬ সালে সিপিএম কংগ্রেসের জোট হয়  তাহলে এই বিধানসভায় ত্রিমুখী লড়াই দেখার সম্ভাবনা আছে। তবুও তৃণমূলের এখানে জয়ের সম্ভাবনা ৬২ শতাংশ। আমাদের সমীক্ষায় ৮৯৭৯ জন সাধারণ পথ চলতি মানুষ, ২২০ টি অটো চালক, ৩৪০টি টোটো চালক, ১১৮টি দোকানদার এর মতামতের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। 
 শাসক দলের প্রার্থী হওয়া দৌড়ে অবশ্যই সাবিনা ইয়াসমিন এর নাম প্রথমেই থাকবে। তবে আরেকজন জেলা পরিষদ সদস্যার নাম ও শোনা যাচ্ছে। তিনি অভিষেক ঘনিষ্ঠ বলে জানা যায়  যাচ্ছে। প্রার্থীর  দৌড়ে অবশ্যই সাবিনা ইয়াসমিন সবার প্রথমেই থাকবেন।
 বিজেপি প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে প্রথমেই নাম উঠে আসছে সুদীপ সাহার নাম। তিনি রাজ্য তপশিলি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক এবং বিধানসভার অবজারভার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পার্টির সঙ্গে যুক্ত। এই বিধানসভার বেশিরভাগ কর্মীরাই চাইছে তিনি এবার প্রার্থী হন এই বিধানসভা থেকে। ৪৩ শতাংশ কর্মীরা চাইছে তিনি এই বিধানসভা থেকে প্রার্থী হন। শুধু তাই নয় আমাদের জনমত সমীক্ষায় ইংলিশবাজার থেকেও তার নাম প্রার্থীর দৌড়ে আছে। ইংলিশবাজার বিধানসভার কর্মীরা ও তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছে।
 এরপরে নাম উঠে আসছে শ্যামচাঁদ ঘোষের। যেহেতু তিনি এখান থেকে ৩ বার প্রার্থী হয়ে এসেছেন। তাই তিনিও প্রার্থীর দৌড়ে আছেন। তবে কর্মীদের পছন্দের প্রার্থী তিনি নন। মাত্র ১৪ শতাংশ কর্মীরা চাইছে তিনি এখান থেকে প্রার্থী হন। 
 এরপরে নাম উঠে আসছে নন্দন ঘোষ, নিবারণ ঘোষ, ও নবদ্বীপ ঘোষের নামও। 
 তবে জনমত সমীক্ষায় সব থেকে উপরেই আছে সুদীপ সাহারা নাম। 
 রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের মতে,  এই বিধানসভা যদি ত্রিমুখী লড়াই হয়  আর যদি বিজেপি সঠিক প্রার্থী নির্বাচন করতে পারে তাহলে ফলাফল খুব কাছাকাছি এসে যেতে পারে। তার কারণ সাবিনা ইয়াসমিন এখান থেকে এবার প্রার্থী হলে গ্রুপ বাজি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি  হবে তৃণমূলে।


Monday, 21 July 2025

সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে CAA ও SIR নিয়ে আলোচনা সভা বাগদায়।

সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে CAA ও SIR নিয়ে আলোচনা সভা বাগদায়।

শুভ কল্যাণ বিশ্বাস, দৃষ্টি বাংলা, হেলেঞ্চা- -গতকাল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য  ও বাগদা বিধানসভার প্রাক্তন এমএল দুলাল চন্দ্রবর এর উদ্যোগে  CAA ও SIR নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় বাগদা বিধানসভার  হেলেঞ্চার একটি অনুষ্ঠান গৃহে। এটি ছিল একটি অরাজনৈতিক আলোচনা সভা। যার মূল উদ্যোক্ত ছিলেন দুলাল চন্দ্র বর। অরাজনৈতিক সংগঠন  নিখিল ভারত বাঙালি সমন্বয় সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস ও রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনির্বাণ হালদার  ছিলেন এই আলোচনা সভার মূল বক্তা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। তিনিও CAA নিয়ে আলোচনা করেন।
 এছাড়া এই সভায় আলোচনা করতে দেখা যায় সমাজসেবী বিভা মজুমদারকে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের বুদ্ধিজীবী লোকজনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে আজকের সভায়। এই সভায় প্রায় 500জন মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তার মধ্যে বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন 30 জন শিক্ষক, বিভিন্ন পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা, জনপ্রতিনিধি, কৃষক, মতুয়া উদ্বাস্তু সম্প্রদায়ের প্রচুর মানুষ। 
 নিখিল ভারত বাঙালি সমন্বয় সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, একজন হিন্দুও  ভারতের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হবেন না। কিন্তু তাদেরকে CAA দরখাস্ত করতে হবে অবিলম্বে। 1 আগস্ট থেকে  ভোটার লিস্ট স্কুটিনি বা SIR শুরু হবে, তার আগে সকল কে CAA দরখস্ত করতে হবে। তাহলে আর কারোর ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। 
 এই আলোচনা সভার মূল উদ্যোক্তা  দুলাল চন্দ্র বর বলেন,  বিজেপি রাজ্য সভাপতি সমীক ভট্টাচার্য  বলেছেন একজন হিন্দুও ভোটার লিস্ট থেকে বাদ পড়বেন না, হিন্দুদের ভারতের নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য কোন কাগজের প্রয়োজন হবে না। আমি দুলাল বর, বাগদা বিধানসভার মতুয়া উদ্বাস্তু সম্প্রদায়ের মানুষদের কথা দিচ্ছি, প্রত্যেকে যাতে ভারতের নাগরিকত্ব পান, এবং ভোটার লিস্টের নাম অক্ষত থাকে, সেই দায়িত্ব আমি নিজে নিচ্ছি। আর যাদের যাদের ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ গেছে, তাদেরকে অনুরোধ আপনারা সকলে CAA দরখাস্ত করুন। যদি নিজেরা করতে না পারেন তাহলে আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করুন আমি ব্যবস্থা করে দেব। এই বার্তা সরাসরি মিটিং থেকে দিয়েছেন দুলাল চন্দ্র বর। 
 বিধায়ক অসীম সরকার বলেন, যদি কারোর কাছে বাংলাদেশের কাগজপত্র না থাকে, তাহলে সেই কাগজপত্র আনার দায়িত্ব আমাদের আপনারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। 
 নিখিল ভারত সমন্বয় সমিতির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও  বারাসাত জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট অনির্বাণ হালদার বলেন, যদি কারোর দরখাস্ত করতে সমস্যা হয়, তাহলে সরাসরি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন আমরা কিভাবে CAA দরখাস্ত করতে হবে সেটা নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে করে দেব।

Friday, 13 June 2025

২০২৬-এ নবগ্রাম বিধানসভায় বিজেপি লড়াই অনেক কঠিন কিন্তু কিছু সমীকরণের উপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।

২০২৬-এ নবগ্রাম বিধানসভায় বিজেপি লড়াই অনেক কঠিন কিন্তু কিছু সমীকরণের উপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।

শুভকল্যাণ বিশ্বাস, দৃষ্টি বাংলা, কোলকাতা - 
 বর্তমানে সারাদেশে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বলা যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গের ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে এক কঠিন লড়াই হতে চলেছে। যে লড়াই হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। নবগ্রাম বিধানসভায় ৫৩% মুসলিম ভোটার ৪৭% হিন্দু ভোটার। ২৬৯ টি বুথ এই বিধান সভায়। যার মধ্যে ১৫০ এর উপরে বুথে মুসলিম ভোট সংখ্যা বেশী। তারপরেও এই বিধান সভায় লড়াই করার মতো জায়গা আছে বিজেপির।
 অর্থাৎ ২০২৬-এ বিধানসভা নির্বাচনে এখানে তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ। কিন্তু তারপরেও এই জয় তৃণমূলের খুব সহজে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। নবগ্রাম বিধানসভায় তৃণমূলের জয়ের পিছনে যদি, কিন্তু,অথবা, ইত্যাদি, সমীকরন কাজ করবে। বিজেপি যদি সঠিক প্রার্থী নির্বাচন করতে পারে তাহলে জোরদার লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে বিজেপির তরুণ তুর্কি নেতৃত্ব মানিক সরকারকে স্থানীয় মানুষেরা বিজেপির প্রার্থী হিসেবে চাইছে। তিনি আরএসএসের একজন পূর্ণ কালীন বিস্তারক ছিলেন । তিনি বিভিন্ন বিধানসভায় কাজ করেছেন বিস্তারকের।
 ২০১১ সাল থেকে কানাই চন্দ্র মন্ডল নবগ্রাম বিধানসভার বিধায়ক। ২০১১ এবং ২০১৬ সালে তিনি সিপিএমের বিধায়ক ছিলেন। এরপরে তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন এবং ২০২১ সালে বিজেপি কে হারিয়ে তৃণমূলের বিধায়ক হন। 
 ২০২১ সালে বিজেপির টিকিটের যিনি লড়াই করেছিলেন সেই মোহন হালদার তৃণমূলের  কানাই চন্দ্র মন্ডল এর কাছে প্রায় ২৫ হাজার ভোটে হেরে যান। 
 এবং আশ্চর্যের বিষয়  এই বিজেপির মহান হালদার হেরে যাওয়ার তিন মাসের মধ্যে  তিনি তৃণমূলের যোগদান করেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি খলিলুর রহমানের হাত থেকে তিনি পতাকা তুলে নিয়ে তৃণমূলের যোগদান করেন। 
 এই বিধানসভার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে শাসকদল ও বিরোধী দুই দলই। 
 যিনি সিপিএমের দুই বারের বিধায়ক ছিলেন সেই কানাই মন্ডল  তৃণমূলে এসে তৃণমূলের বিধায়ক হয়ে গেলেন। তার বিপক্ষে যিনি লড়লেন মোহন হালদার বিজেপির হয়ে তিনিও বিধানসভা ভোটের তিন মাস পরে তৃণমূল হয়ে গেলেন। 
 এই কারণেই নবগ্রাম  বিধানসভা মানুষের তৃণমূলের প্রতি ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পরে। কানাই চন্দ্র মন্ডল ১৫ বছরের এম এল। তার প্রতিও মানুষের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে। 
 এখন ধরে নেওয়া যাক কানাই চন্দ্র মন্ডল কে ২০২৬সালে যদি তৃণমূল টিকিট দেয় তাহলে তার জয়টা খুব সহজেই আসবেনা। সে যতই এই বিধানসভায় মুসলমান ভোট বেশি হোক না কেন। 
 এবার এই বিধানসভায় কানাই বাবু যদি প্রার্থী হন তাহলে মুসলমান ভোট ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সে ক্ষেত্রে বিজেপি যদি একজন সুযোগ্য সৎ নিষ্ঠাবান যুবককে প্রার্থী করতে পারে তাহলে বিজেপি লড়াইতে চলে আসবে। জনমত সমীক্ষায় এই তথ্যই উঠে এসেছে। যদিও লড়াই টা খুবই কঠিন। 
 ২০১১ সালে সিপিএমের কানাই চন্দ্র মন্ডল ভোট পেয়েছিলেন ৭৮হাজার ৭০৩ ভোট যা মোট পোলিং ভোটের ৪৯ শতাংশ। কংগ্রেসের প্রবাল সরকার ভোট পেয়েছিলেন ৭১ হাজার ১৪৭ ভোট যা মোট পোলিং ভোটে ৪৪ শতাংশ। আর বিজেপির দিলিপ হালদার পেয়েছিলেন ৪৪৮৯ ভোট।।
 ২০১৬ সালে সিপিএমের কানাই চন্দ্র মন্ডল পুনরায় ৯৯ হাজার ৫৪৫ ভোট পেয়েছিলেন। যা মোট পোলিং ভোটের ৫৫ শতাংশ। বিজেপির সুশান্ত-মার্জিত পেয়েছিলেন ১৩ হাজার ৮৪ ভোট।
 ২০২১ সালে কানাইচন্দ্র মন্ডল সিপিএম থেকে তৃণমূলের যোগদান করে পুনরায় তিনি এখান থেকে জয়ী হন। তিনি মোট এক লক্ষ ৪৫৫ ভোট পেয়েছিলেন। যা মোট পোলিং ভোটের ৪৮ শতাংশ।  বিজেপির মোহন হালদার ৬৪ হাজার ৯২২ ভোট পেয়েছিলেন। যা মোট পোলিং ভোটের ৩১ শতাংশ। আর সি পি এম কৃপালিনী ঘোষ ৩৯ হাজার ১৩৯ ভোট পেয়েছিলেন। যা পোলিং ভোটের মোট ১৯ শতাংশ । ২০২১ সালে নবগ্রাম বিধানসভায় বিজেপির জয়ের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সিপিএমের কৃপালিনী ঘোষ।  এই বিধানসভা লড়াইটা হয়েছিল ত্রিমুখী। যদি দ্বিমুখি লড়াই হতো তাহলে বিজেপি লড়াইতে থাকতো। 
 এই বিধানসভায় মানুষের কাছে বোঝাতে হবে তৃণমূলকে হারাতে গেলে সবাই জোটবদ্ধ হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে সেক্ষেত্রে লড়াইটা তৃণমূলের সঙ্গে করা যাবে। 
 ২০২১ সালে বিজেপির টিকিটে লড়াই করে ৬৪ হাজার ভোট দখল করার পরে সেই মোহন হালদার তৃণমূলে চলে যাওয়ার পর এখানকার বিজেপি কর্মীদের মনে একটা ক্ষোভের জন্ম হয়েছে বিজেপি রাজ্য নেতৃতির উপর। তারাই চেয়েছিল এমন কাউকে প্রার্থী করা হোক যিনি সংঘ ঘনিষ্ঠ। 
 জনমত সমীক্ষায় বর্তমানে উঠে এসেছে বিজেপির মানিক সরকার এর নাম। তিনি এই বিধানসভায় বিজেপির পছন্দের  এক নম্বর নেতৃত্ব। তিনি উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন জেলার দীর্ঘকালীন বিস্তারক ছিলেন। মুর্শিদাবাদ দমদম দক্ষিণ কলকাতা বিভিন্ন লোকসভার পূণ্যকালীন বিস্তারক  ছিলেন। দিলিপ হালদার সুশান্ত মার্জিতের নাম শোনা গেলেও সকলের পছন্দের  মানুষ হিসাবে মানিক সরকারের নাম উঠে আসছে।
 তৃণমূলের পক্ষ থেকে এবার ২০২৬ এ কাকে প্রার্থী করে সেটাই কোটি টাকার প্রশ্ন। 
2026 শে নাকাশিপাড়া বিধানসভায় বিজেপি জয়ের কাছাকাছি থাকবে যদি এই কাজ করতে পারে?

2026 শে নাকাশিপাড়া বিধানসভায় বিজেপি জয়ের কাছাকাছি থাকবে যদি এই কাজ করতে পারে?

শুভ কল্যাণ বিশ্বাস দৃষ্টি বাংলা কলকাতা - রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তৃণমূলের বিপক্ষে গেলেও ভোটের ময়দানে তৃণমূলকে হারানো খুব বেশি সহজ হবে না বিজেপির পক্ষে এই সংগঠনের দ্বারা। ভোটের ময়দানের সমস্ত দুর্নীতি ইস্যু গৌণ হয়ে যাবে তৃণমূলের কাছে। 
 তার কারণ লক্ষীর ভান্ডার বাড়িয়ে দিলেই বাঙালি হিন্দু মহিলারা সমস্ত দুর্নীতি গুলো ভুলে যাবে। তাইতো তৃণমূলকে কোন বিধানসভায় হারাতে গেলে সেই বিধানসভা মানুষের চাহিদা এবং সেই বিধানসভায় তৃণমূলের দুর্নীতিগুলো তুলে ধরেই ওই বিধানসভার মানুষের কাছে তুলে ধরে ভোটের ময়দানে লড়াই করতে হবে। 
 মানুষের মৌলিক অধিকার গুলি এই বিধানসভায় রক্ষিত আছে কিনা প্রচারের আলোয় নিয়ে আসতে হবে বিজেপিকে। যে সম্পদের মানুষ বেশি বসবাস করে সেই সম্প্রদায়ের  মানুষকেই  প্রার্থী করার দিকে নজর দিতে হবে।  চিন্তা করতে হবে ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করার।  জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে এই বিধানসভায় মানুষের একটাই ক্ষোভ  তারা সর্বদা ভূমিপুত্রকে বিধায়ক হিসেবে দেখতে চান এই বিধানসভায়।  নাকাশিপাড়া বিধানসভায় ৪৭% মুসলিম ভোটার। তারপরেই ৩০% তপশিলি উদ্বাস্তু মতুয়া সম্প্রদায়ের  ভোটার বসবাস করে। বাকি ২৩% হিন্দু অন্যান্য সম্প্রদায়ের ভোটার। 
 ২০১১ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নাকাশিপাড়া বিধানসভার ডেমোগ্রাফি অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। ২০১১ সালে যেখানে মুসলমান ভোটার ছিল ৩৭%, সেটা ২০২৫ এ এসে দাঁড়িয়েছে ৪৭%।
 ২০১১ সালে হিন্দু ভোটার ছিল ৬৩% বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৫৩%। 
 এইভাবে চলতে থাকলে আগামী দশ বছরের মধ্যে এই বিধানসভা মুসলিম ভোটারের সংখ্যা বেশি হয়ে দাঁড়াবে। এখানকার ভৌগোলিক ডেমোগ্রাফি অনেকটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে মফস্বলের এলাকাগুলিতে। 
 দেখে নিয়ে যাক ২০১১ সাল থেকে  নাকাশিপাড়া  বিধানসভা  ভোটের ফলাফল।
 নাকাশিপাড়া বিধানসভায় মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৪৭হাজার ৬৯১ জন। ১৯৫১ সাল থেকে এখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখানে মোট ভোটের ৫১ শতাংশ পুরুষ ভোটার এবং ৪৯ শতাংশ মহিলা ভোটার। 
 ২০০৯ সাল থেকে নাকাশিপাড়া বিধানসভায় যে সমস্ত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে এবং কোন দল কত শতাংশ ভোট পেয়েছে তার তথ্য তুলে ধরা হলো।
 বিগত দুটি লোকসভায় এই বিধানসভায় ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, 
২০২৪ লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস এখানে  ৪৪.০৫% ভোট পেয়েছিল  আর বিজেপি পেয়েছিল ৪১.০৮% এবং সিপিএম পেয়েছিল ১১.৮৭ %.
 তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির মাত্র ৩ শতাংশ ভোট শেয়ার কম ছিল। গত লোকসভা ভোটে সিপিএম এই বিধানসভায় প্রায় ১২% কাছে ভোট পাওয়ার কারণে এখানে বিজেপি লিড দিতে পারেনি। তৃণমূল এই বিধানসভায় হিন্দু ভোট মাত্র ৫-৬% পেয়েছিল।
২০১৯ লোকসভা ভোটের বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তৃণমূল পেয়েছিল ৪৪. ০৯ শতাংশ, বিজেপি পেয়েছিল ৪২.৩ শতাংশ, আর সিপিএম পেয়েছিল ৮.২ শতাংশ। 
 অর্থাৎ বিগত দুটি লোকসভা আসনের তৃণমূল কিন্তু এখানে বেশি ভোট বাড়াতে পারেনি। নাকাশিপাড়া  বিধানসভায়  তৃণমূল তাদের ভোটব্যাঙ্ক অক্ষত রেখেছে বিগত ১৫ বছর ধরে। ৪৪ -৪৫ শতাংশ ভোট তারা বিগত এখনো ধরে রেখেছে। যার মধ্যে প্রায় ৩৮-৩৯% মুসলিম ভোটার। 
 তৃণমূলের কল্লোল খান ২০১১ সাল থেকে এখানে রানিং বিধায়ক এখনো পর্যন্ত। 
 ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে  তৃণমূলের কল্লোল   খান ৭৯ হাজার ৬৪৪ ভোট পেয়েছিলেন। যা মোট পোলিং ভোটের ৪৯ শতাংশ। 
 সিপিএমের গায়ত্রী সদ্দার  ৬৩ হাজার ১৭০ ভোট পেয়েছিলেন। যা পোলিং ভোটার মোট ৩৯ শতাংশ। বিজেপির সুশীল বর্মন  ১২হাজার ২২৭ ভোট পেয়েছিলেন। যা পোলিং ভোটের মোট ৭% শতাংশ।
 ২০১৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের কল্লোল খান ৮৮ হাজার ৩২ ভোট পেয়েছিলেন। যা মোট পোলিং ভোটের ৪৭ শতাংশ। সিপিএমের তন্ময় গাঙ্গুলী ৮১ হাজার ৭৮২ ভোট পেয়েছিলেন। যা মোট পোলিং ঘটে ৪৩ শতাংশ। বিজেপির অনুপ কুমার মন্ডল পেয়েছিলেন ১২ হাজার ৭২৪ ভোট। 
 ২০২১ সালে কল্লোল খান পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ৪হাজার ৮১২ ভোট। যা মোট পোলিং ভোটের প্রায় ৫০%। বিজেপির শান্তনু দেব  পেয়েছিলেন ৮৩ হাজার ৫৪১ ভোট। আর সিপিএমের তন্ময় গাঙ্গুলি  পেয়েছিল ১১হাজার ২৭৭ ভোট। 
 বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বিধানসভায় জনমত সমীক্ষায় উঠে এসেছে তৃণমূল সামান্য  হলেও এগিয়ে আছে বিজেপির থেকে। 
 তৃণমূলের তরফ থেকে  হয়তো কল্লোল খানকে ২০২৬শে প্রার্থী নাও করতে পারে। কনিষ্ক চক্রবর্তীর নাম শোনা যাচ্ছে প্রার্থী হওয়া দৌড়ে তিনি এগিয়ে আছেন। এবছর তৃণমূল পঞ্চাশের অধিক বিধায়কের টিকিট এবার পুনরায় নাও দিতে পারে। 
 জনমত সমীক্ষায় ও কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে বিজেপির শান্তনু দেব ও অনুপ কুমার মন্ডল, অনন্ত সরকার,অলক কুন্ডু আরো কয়েক জনের নাম নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। 
 শাসক ও বিরোধী দলের পক্ষ থেকে ভূমিপুত্রকে সকলেই প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছে। আর বিজেপির পক্ষ থেকে  এলাকার মানুষের দাবি  এই বিধানসভা এবার  মতুয়া উদ্বাস্তু সম্প্রদায়ের প্রার্থী করা হোক। তার কারণ  এই বিধানসভায় মুসলিম ভোটারের পরেই মতুয়া উদবাস্তু  সম্প্রদায়ের ভোট সবচেয়ে বেশি। 
 এখন দেখা যাক শাসক এবং বিরোধীদল কাকে প্রার্থী করে। 



Thursday, 12 June 2025

ভারতের মাটিতে এত বড় বিমান দুর্ঘটনা এর আগে সম্ভবত কখনো ঘটেনি।

ভারতের মাটিতে এত বড় বিমান দুর্ঘটনা এর আগে সম্ভবত কখনো ঘটেনি।

শুভ কল্যাণ বিশ্বাস, দৃষ্টি বাংলা কোলকাতা - ভারতের ইতিহাসে ভারতের বুকে এত বড় যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনায় এর আগে সম্ভবত ঘটেনি। একসাথে ২০০ জন নম্বর মানুষের প্রাণ গেছে এরকম ঘটনা ভারতবর্ষের ইতিহাসে বিরল।
আমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী বিমানে প্রায় আড়াইশো জন।  এই বিমানে প্রায় ষাটের উপরে ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন। তাদের প্রায় সকলেই নিহত হয়েছেন বলে খবর। এই বিমান দুর্ঘটনায় সারা বিশ্বের শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
 বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না নাশকতার ছক ছিল সেটা এখনো স্পষ্ট হয়নি।
 এই বিমানের ছিলেন গুজরাটের প্রাক্তন  মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি। 
 মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের উপর  বিমানটি এসে আছড়ে পরে।

Wednesday, 11 June 2025

2026 এ কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভায় খেলা জমে যাবে যদি বিজেপি এই কাজ করতে পারে?

2026 এ কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভায় খেলা জমে যাবে যদি বিজেপি এই কাজ করতে পারে?

 শুভ কল্যাণ বিশ্বাস, দৃষ্টি বাংলা, কৃষ্ণনগর  - ২০১১ সাল থেকে কৃষ্ণনগর দক্ষিণ তৃণমূলের দখলে। উজ্জ্বল বিশ্বাস পরপর তিনবার তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছেন কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা থেকে। ২০২১ সালের ৫% ভোটের পার্থক্য নিয়ে বিজেপিকে হারিয়ে  তিনি তৃতীয় বারের জন্য বিধায়ক হয়েছিলেন। 
 কিন্তু ২০২৬ সাল একটা সহজ অংক বিজেপি খেলে দিতে পারলেই এখানে খুব সহজেই বাজিমাত করতে পারবে। খেলাটা হয়তো সহজ কিন্তু তাকে গ্রাউন্ডে নামিয়ে দেওয়াটা অনেক কঠিন। প্রত্যেকটা বুথ ধরে ধরে যদি কর্মীদের এখনই গ্রাউন্ডে নামিয়ে দেওয়া যায় তাহলেই বাজিমাত করতে পারবি বিজেপি এই বিধানসভায়।
 ভোটের পরিসংখ্যান দিয়ে বিবেচনা করা যাক। ২০১১ সালে উজ্জ্বল বিশ্বাস ৭১ হাজার ৩৯২ ভোট পেয়েছিলেন। যেটা কিনা মোট ভোটের ৪৬ শতাংশ। আর সিপিএমের রমা বিশ্বাস পেয়েছিলেন ৬০ হাজার ৩৬৪ ভোট যেটা কিনা মোট ভোটের ৩৯ শতাংশ। আর বিজেপির মহাদেব সরকার পেয়েছিলেন ১৪হাজার ৩৯৮ ভোট যেটা মোট ভোটের ৯ শতাংশ। 
 ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে  উজ্জ্বল বিশ্বাস দ্বিতীয়বারের জন্য বিধায়ক হন ৮০ হাজার ৭১১ ভোট পেয়ে যেটা কিনা মোট পোলিং ভোটের ৪৬ শতাংশ।  আর সিপিএমের মেঘলাল শেখ  ৬৭ হাজার ৮৯৭ ভোট পেয়েছিলেন। যেটা কিনা মোট পোলিং ভোটের ৩৮ শতাংশ। বিজেপির মহাদেব সরকার পেয়েছিলেন ২২হাজার ৮৫০ ভোট যেটা কিনা মোট ভোটের ১৩ শতাংশ। 
 ২০২১ সালে উজ্জ্বল বিশ্বাস তৃতীয়বারের জন্য বিধায়ক নির্বাচিত হন ৯১ হাজার ৭৩৮ ভোট পেয়ে। যেটা কিনা মোট ভোটের ৪৭ শতাংশ। আশ্চর্যের বিষয় ২০২১ সালে বিজেপি এখানে তৃতীয় স্থান থেকে দ্বিতীয় স্থান দখল করে। বিজেপির মহাদেশ সরকার ৮২ হাজার ৪৩৩ ভোট পেয়েছিলেন। যেটা কিনা মোট পোলিং ভোটের ৪২ শতাংশ। আর সিপিএমের সুমিত বিশ্বাস পেয়েছিলেন ১৫ হাজার ৬০০ ভোট। যেটা কিনা মোট ভোটের আট শতাংশ। 
 ২০১১ সালে বিজেপি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল ২০২১ সালে সিপিএম সেই স্থানে চলে আসে। আর বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের ভোটের পার্থক্য দাঁড়ায় পাঁচ শতাংশ মাত্র। ২০২১ সালে বিজেপির প্রার্থী নির্বাচনে কর্মীদের মধ্যে যে মত বিরোধ ছিল সেটা কিন্তু প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল সেই সময়। এখানে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির পার্থক্য ছিল মাত্র ৯৩০০ ভোটের। 
 এবার তুলে ধরা যাক এই বিধানসভার জাতপাতের ভিত্তিতে ভোটের পরিসংখ্যান।
 ২০১১ সালের কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভায় মুসলিম ভোট ছিল ১৭ শতাংশ। যেটা ২০২১ সালে এসে দাঁড়ায় ২৭.৫%। 
 অর্থাৎ বিগত ১০ বছরের ১০ শতাংশ মুসলিম ভোট বেড়েছে এই বিধানসভায়। 
 এখন আসা যাক কিভাবে বিজেপি এই বিধান সভা জয়লাভ করতে পারবে সেই সহজ অংকটা তুলে ধরা। 
 ২০২১ সালের সিপিএম যে ১৫ হাজার ভোট পেয়েছিল তার ৯৮ শতাংশ  হিন্দু ভোটার। যে সমস্ত পরিবার ২০২১ সালে সিপিএম করেছিল তাদেরকে বোঝাতে হবে সিপিএমও তোষণের রাজনীতি করেছে পশ্চিমবঙ্গে। বর্তমানে তারা ক্ষমতায় না থাকলেও তোষণের রাজনীতি থেকে তারা এক ইঞ্চি সরে আসেনি। এই কথাটাই হিন্দুদের কে বোঝাতে হবে যারা সিপিএম করে। তাহলে কিছু হিন্দু ভোটার এখান থেকে রিকভারি করা যাবে।
 এখন আসা যাক অংকের হিসাবে, কৃষ্ণনগরে দক্ষিনে দু'লক্ষ ২৫ হাজার ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা বেশি। মহিলা ভোটারের সংখ্যা কিছুটা কম। সবচেয়ে বেশি ভোটার যুবক যুবতী।
 যদিও এখানে যুবক যুবতীদের ভোট প্রায় 90% বিজেপির দখলে গেছে গতবার বিধানসভায়। 
 মুসলিম ভোটারের ২৭.৫% এর মধ্যে প্রায় ৯০% তৃণমূল পেয়ে থাকে। ১০ থেকে ১১ শতাংশ হিন্দু  মহিলা ভোটার তৃণমূলের দখলে এই বিধানসভায়। 
 এবার আসা যাক কোন কোন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়ে থাকে। সিভিক ভলেন্টিয়ার এর পরিবার, টোটো অটো রিক্সার পরিবার, অফিস আদালতে কন্ট্রাকচুয়াল কর্মচারী যারা কর্মচারী তাদের পরিবারের ভোট, যে সমস্ত হিন্দু তৃণমূল নেতা আছে তাদের পরিবারের ভোট। 
 তবে সব টোটো অটো ইউনিয়নের লোক যে তৃণমূল কে ভোট দেয় সেটা বলা যাবে না, অনেক টোটো অটো ওয়ালারা ভোট দিতে চায় না তৃণমূলকে। 
 এই সমস্ত পরিবারের লোকজনের সঙ্গে জনসংযোগ বৃদ্ধি করতে হবে বিজেপির। 
 এবার আসা যাক ভোটার ক্যাটাগরিতে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় ভোটার সাধারণত চার ধরনের হয়ে থাকে। A B C D এই চার ধরনের ভোটার নির্ণয় করে তাদের সঙ্গে সেই মতো জনসংযোগ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। 
A ক্যাটাগরির ভোটার অর্থাৎ অ্যাটাকটিভ ভোটার। এই ভোটার হল প্রধান বিরোধীদলের ভোটার। অর্থাৎ বর্তমানে বিজেপির ভোটার। যার পরিমাণ ৩০ শতাংশ। 
B ক্যাটাগরির ভোটার অর্থাৎ ব্যালেন্স ভোটার। যার পরিমাণ ২০ শতাংশ। এটা কোন দলের ভোটার নয়। এরাই ক্ষমতা পরিবর্তনের প্রধান নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। 
C ক্যাটাগরির ভোটার অর্থাৎ কারেন্ট পার্টির। যেটা কিনা শাসকদলের ভোটার। এই ভোটারের পরিমাণ ৪০ শতাংশ।
D ক্যাটাগরির ভোটার অর্থাৎ ডিফিকাল্ট বা ডিফারেন্ট ভোটার। যার পরিমাণ ১০ শতাংশ।
 এই ভোটার পঞ্চায়েত বা পৌরসভা নির্বাচনে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে। 
 এখন বিজেপিকে বি এবং ডি ক্যাটাগরির ভোটারেরকে টার্গেট করতে হবে। 
 ডি ক্যাটাগরির ভোটার নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বুথ সভাপতির ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। 
 প্রত্যেকটা ভোটার লিস্টে খোঁজ নিলে দেখা যায় অনেক ভোটার লিস্ট এ মৃত মানুষের ভোট থেকে যায় সেই ভোট কিন্তু পোলিং হয়ে যায় অনেক সময়। কিছু ভোটার আছে তারা দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতেই থাকে না, বা ভোট দিতে আসে না এই সমস্ত ভোটারদের খোঁজখবর নেওয়া শুরু করতে হবে। 
 তবেই বিজেপি এখান থেকে কিছুটা অ্যাডভান্টেজ পেতে পারে। অর্থাৎ বি এবং ডি ক্যাটাগরির ভোটারকে টার্গেট করে এগোতে হবে সর্বদা সক্রিয় কর্মীদেরকে। এই দুই ক্যাটাগরির ভোটারের সঙ্গে জনসংযোগ বৃদ্ধি করার জন্য পুরনো বিজেপি কর্মীদেরকে এগিয়ে দিতে হবে। 
 এখন দেখা যাক প্রার্থী নির্বাচনে জয়ের ভূমিকা কতটা নির্ভর করে। 
 কর্মীদের পছন্দের প্রার্থী না হলে যেকোনো দলই লড়াইয়ে নামার আগেই পিছিয়ে থাকে। বিজেপিকে সর্বপ্রথম যে কাজটা করতে হবে সেটা হলো ভূমি পুত্রকে বেছে নিতে হবে অবশ্যই কর্মীদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে। তবেই জয়ের রাস্তা কিছুটা এগিয়ে যাবে। 
 এখন দেখে নেওয়া যাক কারা কারা প্রার্থীর দৌড়ে আছে শাসক এবং বিরোধী দলের মধ্যে থেকে। 
 এই মুহূর্তে তৃণমূলের প্রার্থীর দৌড়ে আছেন অবশ্যই উজ্জ্বল বিশ্বাস। গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে তৃণমূল জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে এই মুহূর্তে সুসম্পর্ক বজায় নেই উজ্জ্বল বিশ্বাসের। সে ক্ষেত্রে অভিষেক ঘনিষ্ঠ একজনের নাম শোনা যাচ্ছে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে তিনিও এগিয়ে আছেন। 
 বিরোধী অর্থাৎ বিজেপির পক্ষ থেকে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে অবশ্যই নাম থাকছে মহাদেব সরকারের। কিন্তু 21 সালেই এই মহাদেব সরকারের মনোনয়ন নিয়ে দলের মধ্যেই কোন্দল  সৃষ্টি হয়েছিল। জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ ঘোষ তিনিও প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। এছাড়া জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস, জেলা যুব মোর্চার সভাপতি বিশ্বজিৎ সরকার, প্রাক্তন  আরএসএস প্রচারক অলোক কুন্ডু,জেলা সহ-সভাপতি প্রানবন্ধু বিশ্বাস  এর নাম জনমত সমীক্ষায়  উঠে এসেছে কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভার প্রার্থী হওয়ার জন্য। 

 জনমত সমীক্ষায় এই মুহূর্তে কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভায় বিজেপি জয়ের সম্ভাবনা ৪৮% ও তৃণমূলের জয় সম্ভাবনা ৫২%। তবে যদি বিজেপি সঠিক প্রার্থী নির্বাচন  করতে পারে এবং বিজেপি পুরনো কর্মীদেরকে মাঠে নামাতে পারে তাহলে এই জয় আটকাতে পারবেনা তৃণমূল। এখানে তাহলে বিজেপি এগিয়ে যাবে। মুর্শিদাবাদের দাঙ্গা এবং অপারেশন সিঁদুর বিজেপিকে অনেকটাই অ্যাডভান্টেজ দিয়েছে। পাশাপাশি এসএসসির দুর্নীতি কান্ড রয়েছে যেটা ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের ইস্যু হতে চলেছে। 
 এখন দেখা যাক কে বা কারা এখানে প্রার্থী হন এবং কোন দল জয় লাভ করে সেটা সময়ের উপর নির্ভর করবে।

 
 

Monday, 9 June 2025

294 টি আসন কে তিন ভাগে বিভক্ত করে নির্বাচনে ঝপিয়ে পড়া উচিত বিজেপির।

294 টি আসন কে তিন ভাগে বিভক্ত করে নির্বাচনে ঝপিয়ে পড়া উচিত বিজেপির।

শুভকল্যাণ বিশ্বাস, দৃষ্টি বাংলা, কোলকাতা - সারাদেশের বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন আকাশ মাতাল পার্থক্য থাকে সর্বদা। স্বাধীনতার পর থেকে যখন(১৯৫২) প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তখন থেকেই ব্যতিক্রমী ছিল বাংলা নির্বাচন। বাংলার নির্বাচনকে মানুষ উৎসবের বাতাবরণ মনে করেন। 
 এখানে ভোটের সময় কালকে উৎসবের সময়কাল মনে করা হয়। 
 ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এবং ভোট পরবর্তী হিংসায় বহু মানুষের প্রাণ গেছে। যেটা সারা দেশে এরকম ঘটনা বিরল। বর্তমান পরিস্থিতিতে পশ্চিমবাংলা নির্বাচন মানেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

 শাসক দল তৃণমূলকে এবার নির্বাচনে হারাতে গেলে বিজেপিকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত ভোটারকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করলে দেখা যাচ্ছে এক অভিনব চিত্র পাশাপাশি সমস্ত বিধানসভা(২৯৪) কেও তিনটি ভাগে বিভক্ত করলে দারুন তথ্য উঠে আসছে।
 পশ্চিমবঙ্গের এক তৃতীয়াংশ মুসলিম ভোটার বিজেপি পাবে না ধরে নিয়েই বিজেপি এগোতে হবে। সে ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিধানসভা গুলিতে হিন্দু(৭০%) ভোটার বেশি এবং মুসলিম ভোটার(৩০%) কম  ভোটার সেইগুলো বিজেপিকে মার্কিং করতে হবে। ১৭০-১৮০ টি বিধানসভায় হিন্দু ভোটারের সংখ্যা বেশি। ৮০-৯০ টি বিধানসভায় মুসলিম ভোটারের সংখ্যা বেশি। ২০-২৫ টি বিধানসভায় প্রায় সমান সমান হিন্দু মুসলিম ভোটার। এইভাবে তিনটি ক্যাটাগরিতে  বিধানসভা গুলোকে ভাগ করে নিতে হবে। 
 যদিও শাসক এবং বিরোধীরা এই ভাবেই তারা রণকৌশল ঠিক করছে। কিন্তু কোথাও বিজেপির পরিসংখ্যানে কিছুটা ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
 বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচনে প্রচুর ত্রুটি সকলের সামনে ফুটে উঠেছে। যারা এবার সাংগঠনিক নির্বাচনের মন্ডল সভাপতি হয়েছেন তার বেশিরভাগ সিপিএম এবং তৃণমূল কংগ্রেস থেকে আসা মানুষ। ২০১৯ সালের পর আসা কর্মী বা কার্যকর তাদের  বেশিরভাগ মন্ডল সভাপতি করা হয়েছে। যেটা সংগঠনের পক্ষে খুবই খারাপ নিদর্শন হয়ে উঠে আসছে। বিজেপির যারা পুরনো কার্যকর্তা তার বেশিরভাগই সংগঠনের বাইরে আছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ভার্সেস তৃণমূলের লড়াই চলছে। অর্থাৎ তৃণমূল থেকে আসা বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের লড়াই। প্রকৃত পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে লড়াই চলছে তৃণমূল ভার্সেস তৃণমূল ব্যানারটা শুধু বিজেপির। মাঝখান থেকে সিপিএম কংগ্রেস নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। ২০২১ সালে যে সমস্ত রাজ্য বিজেপির নেতৃত্ব ছিল তাদেরকে এখন দূরবীন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার কারণ লড়াইটা এখন আর তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির নেই। এখন চলছে নব্য বিজেপির সঙ্গে পুরাতন বিজেপির। আর এটা থেকে মজা নিচ্ছে শাসক দল তৃণমূল। এসএসসি কেলেঙ্কারি নিয়ে তৃণমূল যতটা ব্যাকফুটে ছিল তোর ৫০ শতাংশ সুবিধাও বিজেপি নিতে পারিনি তার সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে। 
 এই নিয়োগ কেলেঙ্কারিকে সামনে রেখে সিপিএম তাদের সাংগঠনিক শক্তি পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে। কিছু তরুণ নেতৃত্বকে সামনে নামিয়ে দিয়েছে সিপিএম এর সংগঠনকে মজবুত করার জন্য। তার সঙ্গে রয়েছে হাইকোর্টের কিছু উকিল যারা সিপিএমকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সংগঠন শক্তিশালী করার জন্য সাহায্য করছে। 
 এসএসসি  কেলেঙ্কারি ১০% সুবিধা ২০২১ সালে বিজেপি নিতে পারিনি তেমনি ২০২৬ সালেও নিয়োগ কেলেঙ্কারি সুবিধা ঘরে তুলতে পারবে না বিজেপি। তার একমাত্র কারণ সাংগঠনিক দূর্বলতা। রাজ্য নেতৃত্বের যে দ্বন্দ্ব সেটা মন্ডল স্তর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। রাজ্য থেকে মন্ডল স্তর পর্যন্ত সকলেই কোন না কোন লবির লোক। কিন্তু কেউ এরা বিজেপির লোক বলে নিজেদেরকে পরিচিতি দেয় না। 
 তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে সরাতে গেলে প্রথমে যে কাজটা করতে হবে বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতাকে কাটিয়ে উঠতে হবে। নতুন পুরাতন সকলকেই সংগঠনের মধ্যে এনে সকলকে কাজে লাগাতে হবে। না হলে এই তোলা ফাঁকা সংগঠন দিয়ে বিজেপি তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে হারাতে পারবে না।